আপনার শিশুর প্রতিভা বাড়িয়ে নিন ছোট বেলাতেই। অল্প বয়সে বীজ বপন করলে সেটা মজবুত হয়ে স্থাপিত হয়। এজন্য জ্ঞানীরা শিশুকে দক্ষ করে গড়ে তোলার কথা বলেছেন ছোট কাল থেকেই। সহজ কথায় সরলমনা বাচ্চাকে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে খেলাচ্ছলে তার মেধা আর প্রতিভাকে বিকাশ করুন জোর-জবরদস্তি না করে। আমরা এই আর্টিকেলে আলোচনা করব কিভাবে শিশুর প্রতিভা বাড়িয়ে নিতে পারেন সে সম্পর্কে।
অল্প বয়সেই শিশুর বুদ্ধিমত্তা শাণিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। শিক্ষাবিদরা বহুবার সাবধান করেছেন এই বলে যে, “শিশুদের জবরদস্তি করে প্রতিভাবান করে গড়ে তোলার চেষ্টা করলে হিতে বিপরীত হয়। তাদের নানারকম সামাজিক এবং মানসিক সমস্যা তৈরি হয়।” কিন্তু আপনি যদি বাচ্চাকে কোনো চাপের ভেতর না ফেলে তার বুদ্ধি বিকাশে সহায়তা করতে চান, নীচে বর্ণিত কিছু পন্থা অবলম্বন করে চেষ্টা করতে পারেন।
১. শিশুকে নানা ধরণের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করুন: শিশুদের কোনো বিষয়ে উদ্বুদ্ধ রাখতে, আগ্রহী রাখতে তাদেরকে অভিনব সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করতে হয়। জীবনের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, সাহস বাড়ায়। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, দিনের পর দিন একই রকম গতানুগতিক জীবন শিশুর জীবনে আলস্য ও স্থবিরতা ডেকে আনে। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ প্রতিকুলতার সাথে শিশুর খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা বাড়ায়।
২. তাদের প্রতিভা এবং আগ্রহকে উৎসাহিত করা: খেলাধুলা হোক বা সঙ্গীত হোক বা নাটকের ক্লাস হোক, বা যেটাই হোক যেসব বিষয়ে আপনার শিশুর আগ্রহ রয়েছে সে সব বিষয়ে চর্চা করার সুযোগ অল্প বয়স থেকে দিতে হবে। তাহলেই প্রতিভা বিকাশের সম্ভাবনা বাড়বে। শিশুর ইচ্ছার বিরোদ্ধে ‘কিছু হওয়ার জন্য’ তাদের ওপর চাপ তৈরি করা হিতে বিপরীত হবে। সে যা নয়, তা বানানোর চেষ্টা করলে ক্ষতি ছাড়া লাভ হবে না।
৩. বাচ্চার বুদ্ধিবৃত্তিক এবং আবেগের চাহিদাকে সাহায্য করতে হবে: সমস্ত শিক্ষার মূলে রয়েছে জানার আগ্রহ, জিজ্ঞাসা। স্কুল শুরুর আগেই শিশুরা অনেক প্রশ্ন করে। ধৈর্য্য না হারিয়ে সেসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া কিন্তু জরুরি। তাদের বুদ্ধি বিকাশের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে শিশুর প্রতিভা বাড়িয়ে নিন। শিশু যত “কেন” এবং “কীভাবে” প্রশ্ন তুলবে, স্কুলে তার সাফল্যের সম্ভাবনা ততই বাড়বে।
৪. জানা বা শেখার চেষ্টার প্রশংসা করুন, তার ক্ষমতাকে নয়: শিশুর শিক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়াকে বেশি প্রশংসা করুন, ফলাফলকে নয়। নতুন কোনো ভাষা শেখার জন্য তার চেষ্টা, এমনকি সাইকেল চালানোর জন্য তার চেষ্টা – এসবকে উৎসাহিত করুণ। জানার চেষ্টা, শেখার চেষ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শেখার উৎসাহই পরবর্তী জীবনে তাকে সাফল্যের দরজায় নিয়ে যাবে।
৫. ব্যর্থতা ভীতিকর কিছু নয়: শিশুর ভুলগুলোকে তার শিক্ষার অংশ হিসেবে দেখতে হবে। ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে। ভুল করলে বাচ্চাদের ভবিষ্যতে সঙ্কট মোকাবেলার ক্ষমতা বাড়ে। অস্বাভাবিক মনে রাখার ক্ষমতা দেখলে বুঝবেন আপনার বাচ্চা একটি প্রতিভাধর।ইংরেজিতে কথা বলার সহজ টেকনিক শিখতে চাইলে ভিজিট করুন
৬. কোনো লেবেল বা তকমা নয়: কোনো লেবেল বা তকমা সেটে দিলে আপনার বাচ্চা অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। ভবিষ্যতে কোনো ব্যর্থতার ভয়ে সারা জীবন সে কুঁকড়ে থাকতে পারে।
৭. শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ: প্রতিভাবান শিশুরা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ চায়। তাদের নিজের গতিতে শিখতে চায়। চলতি শিক্ষা ব্যবস্থার মাঝে তাদের সেই বিশেষ চাহিদা পূরণে বাবা-মাকে শিক্ষকদের সাথে নিয়মিত পরামর্শ করতে হবে।
৮. শিশুর সক্ষমতা যাচাই: বাড়তি চাপ দেয়ার জন্য স্কুলের সাথে দেন-দরবার করার আগে আপনার শিশুর শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে। আপনার শিশুর অনেক অজানা সমস্যা থাকতে পারে। যেমন- ডিজলেক্সিয়া, তার মনোযোগের ঘাটতি থাকতে পারে, তার হাইপার-অ্যাকটিভিটি বা অতিমাত্রায় চঞ্চলতার সমস্যা থাকতে পারে।
কীভাবে বুঝবেন আপনার বাচ্চা প্রতিভাধর?
কিছু ইঙ্গিত-
– মনে রাখার অস্বাভাবিক ক্ষমতা
-খুব অল্প বয়সে পড়তে শেখা
-অস্বাভাবিক কিছু আগ্রহ, শখ অথবা বিশেষ কিছু বিষয়ে গভীর জ্ঞান
-বিশ্বের চলমান ঘটনাবলী সম্পর্কে ধারণা -সবসময় প্রশ্ন করা
-উচ্চমানের রসিকতা বোধ
-সঙ্গীত নিয়ে আগ্রহ
– নিয়ন্ত্রণ নেয়ার আগ্রহ।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
ইসলামের দৃষ্টিতে স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ১০টি উপায় জানতে ভিজিট করুন