দোয়া কবুল হওয়ার স্থানসমূহ নিয়ে আজকের লিখনী। পৃথিবীতে এমন কিছু জায়গা আছে যেগুলোতে মানুষের দোয়া কবুল হয়ে থাকে। কেউ যদি দোয়া কবুল হওয়ার স্থানসমূহ সম্পর্কে জানতে পারে তাহলে তার জন্য ভালই হয়।এই জায়গাগুলো হলো পবিত্র।
মক্কা শরিফে দোয়া কবুলের বিশেষ স্থানসমূহ
হজ্ব ও ওমরাহ করার জন্য ইহরামের নিয়ত করা থেকেই দোয়া কবুল হওয়া শুরু হয়। হজ্ব ও ওমরাহ পালনকালে এমন কতিপয় পবিত্র স্থান রয়েছে যেগুলোতে দোয়া কবুল হওয়ার প্রবল সম্ভবনা থাকে। কেননা এই স্থানগুলোতে নবী-রাসূলগণের দোয়া কবুল হওয়ার নজির রয়েছে। নিচে দোয়া কবুলের প্রসিদ্ধ কযেকটি স্থানের নাম উল্লেখ করছি-
কাবা শরিফ
মসজিদুল হারামের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কালো রঙের চতুষ্কোণ আয়তাকার গৃহটিই হলো কাবা শরিফ। এই স্থানে দোয়া কবুল হয় কারণ এটা হলো আল্লাহর ঘর।
হারাম শরিফ
হারাম শরিফের সীমানা বায়তুল্লাহর পশ্চিমে জেদ্দার পথে শুআইদিয়া পর্যন্ত ১০ মাইল, পূর্বে জেরুজালেমের পথে ৯ মাইল, দক্ষিণে তায়েফের পথে ৭ মাইল এবং উত্তরে মদিনা শরিফের পথে ৫ মাইল। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
মসজিদুল হারাম
মসজিদুল হারাম হলো কাবা শরিফের চারদিকের বৃত্তাকার মসজিদ। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
হাতিম
কাবা ঘর সংলগ্ন উত্তর দিকে অর্ধবৃত্তাকার দেয়াল ঘেরা স্থান ‘হাতিম’ ও ‘হুজ্জাতুল ইসমাইল’। এই স্থানটুকু আগে কাবা ঘরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। নবী করিম (সা:) এর নবুয়তপ্রাপ্তির কিছুদিন আগে কাবা ঘরের সংস্কার করা হয়। এ সময় হালাল অর্থের অভাবে পূর্ণ কাবা নির্মাণ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি বিধায় হাতিম অংশটুকুন বাদ রেখেই কাবাঘর নির্মাণ করা হয়। এই স্থানেও দোয়া কবুল হয়।
মিজাবে রহমত
কাবাঘরের ছাদের পানি পড়ার জন্য উত্তর পাশে হাতিমের ভেতরে মাঝখান বরাবর সোনার পরনালাকে বলা হয় মিজাবে রহমত। এই স্থানেও দোয়া কবুল হয়।
কাবা শরিফের রোকনসমূহ
কাবাঘরের প্রত্যেক কোণকে রোকন বলা হয়। কাবাঘরের উত্তর-পূর্ব কোণকে বলা হয় রোকনে ইরাকি, উত্তর-পশ্চিম কোণকে বলা হয় রোকনে শামি এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কোণকে বলা হয় রোকনে ইয়ামানি। এই স্থানসমূহেও দোয়া কবুল হয়।
হাজরে আসওয়াদ
কাবাঘরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে দেয়ালে লাগানো জান্নাতি পাথর। এই স্থানে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।
মুলতাজিম
হাজরে আসওয়াদ ও কাবা ঘরের দরজার মধ্যবর্তী স্থান। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
বাবুল কাবা
কাবাঘরের দরজা। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
মুস্তাজার
কাবার বহির্গমন দরজা। বর্তমানে দেয়াল দিয়ে বন্ধ করা আছে। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
তাওয়াফের প্রতি চক্করে এই স্থানে পড়তে হয়, ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ দুনিয়া হাছানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাছানা; ওয়া কি না আজাবান নার।’ এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
রোকনে ইয়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যস্থল
মাতাফ
কাবা শরিফের চতুর্দিকে রয়েছে তাওয়াফের জন্য খোলা স্থান। এই স্থানগুলোতেও দোয়া কবুল হয়।
মাকামে ইব্রাহিম
কাবা শরিফের পূর্ব দিকে মাতাফের মধ্যে যে পাথরখণ্ড সংরক্ষিত আছে, যার ওপর দাঁড়িয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ:) কাবা ঘরের প্রাচীর নিমার্ণ করেছিলেন।। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়। দ্রব্যগুণ ও টোটকা চিকিৎসা শিখতে ভিজিট করুন
সাফা
কাবা শরিফের পূর্ব পাশের নিকটতম পাহাড়, যেখান থেকে সাঈ শুরু করতে হয়। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
মারওয়া
সাফা থেকে ৪৫০ মিটার দূরত্বে মারওয়া পাহাড় অবস্থিত। এখানে সাঈ শেষ হয়। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
মাসআ
সাফা ও মারওয়া এই দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী সাঈর স্থান। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
মিলাইনে আখদারাইন
সাফা পাহাড় থেকে মারওয়া পাহাড়ের দিকে ৫০ গজ গেলে দেয়ালে সবুজ বর্ণের লাইট দ্বারা চিহ্নিত প্রায় ৪০ হাত স্থান। এই স্থানেও দোয়া কবুল হয়।
আরাফাত
আরাফাতের ময়দানে হজরত আদম (আ:) এর সঙ্গে হজরত হাওয়া (আ:) এর পুণর্মিলন হয় এবং এই স্থানেই তাঁদের তওবা কবুল হয়। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
জাবালে রহমত
রহমত বা দয়ার পাহাড়, এই পাহাড় আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
মসজিদে নামিরা
আরাফাতের দিন এখান থেকে হজ্বের ভাষণ দেয়া হয়। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
মুজদালিফা
এখানে হযরত আদম (আ:) ও হযরত হাওয়া (আ:) প্রথম একত্রে রাত যাপন করেন। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
মিনা
আল্লাহ তা’আলার আদেশে হজরত ইব্রাহিম (আ:) স্বীয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ:) কে যে স্থানে কোরবানির জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
মসজিদে খায়েফ
মসজিদে খায়েফ মিনা প্রান্তরে অবস্থিত। এখানে আদিকাল থেকে আখেরি নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা:) পর্যন্ত ৭০ জন পয়গাম্বর (আ:) আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি করেছেন। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
জামারাত
মিনাতেই তিনটি জোমরা (স্তম্ভ) অবস্থিত, এগুলোকে একত্রে ‘জামারাত’ বলে। এগুলো ছোট শয়তান (জোমরায়ে উলা), মেজ শয়তান (জোমরায়ে উস্তা), বড় শয়তান (জোমরায়ে আকাবা) নামে পরিচিত। হজরত ইসমাইল (আ:) কে কোরবানির পথে এই স্থানে শয়তান বাধা সৃষ্টি করলে তিনি পাথর ছুড়ে শয়তানকে বিতাড়িত করেন। এই স্থানে দোয়া কবুল হয়।
হজ্ব শেষ করে আরো ৪০ দিন
হজ ও ওমরাহ সম্পন্ন করে বাড়িতে ফিরে আসার পরও ৪০ দিন পর্যন্ত হাজিদের দোয়া কবুল হতে থাকে এবং হাজি যত দিন পর্যন্ত ইচ্ছাকৃত কোনো কবিরা গুনাহে লিপ্ত না হবেন, তত দিন পর্যন্ত তাঁর দোয়া কবুল হতে থাকবে। সোবহানাল্লাহ
অনলাইনে ফ্রি ইনকাম করার সহজ পদ্ধতি জানতে ভিজিট করুন
যোগাযোগ
মো: নজরুল ইসলাম
০১৭১৬-৩৮৬৯৫৮