পাঠক মহলের বিনোদনের জন্য tkincome ডট কমের আজকের আয়োজন কৌতুকের আসর। এই কৌতুকের আসর পর্বে মোট ১৩টি নতুন কৌতুক উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।
এক
যাত্রী: এই রিক্সা যাবে?
চালক: হ্যাঁ, যাবো।
যাত্রী: তাহলে যাও।
দুই
একাকী এক বৃদ্ধ ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন। তিনি ট্রেনের যে কামরায় উঠেছিলেন সেটি বেশ খালি ছিল। যাত্রাপথের এক স্টেশন থেকে আট দশটি যুবক সেই কামরায় উঠে হৈ হল্লা জুড়ে দিল। তাদের একজন বলল- চলো ট্রেনের শিকল টানা যাক। আর একজন বলল – এখানে লেখা আছে অযথা শিকল টানলে পাঁচশো টাকা জরিমানা আর ছয় মাসের কারাদণ্ড হবে। তৃতীয় আর একজন বলল- আমরা সকলে ভাগাভাগি করে পাঁচশো টাকার জরিমানা দিয়ে দেব। সবার কাছ থেকে চাঁদা তুলে পাঁচশো টাকার পরিবর্তে বারোশো টাকা সংগ্রহ হয়ে গেল এবং সমস্ত টাকা প্রথম যুবকের পকেটে রেখে দেয়া হল। তৃতীয় যুবক বলল- চলো শিকল টানি। কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলে দেব ওই বুড়োটাই শিকল টেনেছে, তাহলে আমাদের আর জরিমানার টাকাও দিতে হবে না। বৃদ্ধ সেই কথা শুনতে পেয়ে তাদের দিকে চেয়ে হাত জোড় করে বলল, তোমরা আমার ছেলের মতো। আমি তো তোমাদের কোনো ক্ষতি করিনি, তবে তোমরা আমাকে ফাঁসাতে চাইছ কেন? তার কথা শুনে যুবকদের কারো মনে কোনো দয়া এলো না, শিকল টানাই হলো। রেল কর্মচারী ঘটনাস্থলে পৌঁছলে যুবকগুলি একযোগে বৃদ্ধের উপর দোষ চাপিয়ে দিল।.
রেল কর্মচারী বৃদ্ধকে বলল, এই বয়সে বাচ্চাদের মতো কাজ করতে আপনার লজ্জা করল না? বৃদ্ধ হাত জোড় করে বলল, সাহেব, খুব অসুবিধায় পড়ে শিকল টানতে হয়েছে। রেল কর্মচারী জিজ্ঞাসা করল, কী অসুবিধা? বৃদ্ধ বলল, আমার কাছে বারোশো টাকা ছিল, এই ক’টি ছেলে আমার পুরো টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। এখন সমস্ত টাকা এই ছেলেটির পকেটে রাখা আছে। রেল কর্মচারী তার সঙ্গে থাকা পুলিশকে ছেলেটির তল্লাশি নেওয়ার হুকুম দিলে সেই প্রথম যুবকটির পকেট থেকে বারোশো টাকা উদ্ধার হলো। পুরো টাকা বৃদ্ধকে দিয়ে দেওয়া হলো। আর যুবকগুলিকে গ্রেফতার করে তাদেরকে পরবর্তী স্টেশনে রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলো। যাওয়ার সময় যুবকগুলি বৃদ্ধের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে দেখলে বৃদ্ধ তার সাদা দাঁড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে বলল, এগুলো এমনি এমনি সাদা হয়ে যায়নি হে হে হে!
অনলাইনে ফ্রি ইনকাম করার সহজ পদ্ধতি জানতে ভিজিট করুন
তিন
সেই যে বাড়িতে এক অথিতি এসেছে , এক সপ্তাহ যায়, দু’সপ্তাহ যায় তবু যাবার কোনো লক্ষন নেই। স্বামী-স্ত্রী কেউ কিছু বলতে পারছে না লজ্জায়। একদিন পাশের ঘরে অথিতিকে শুনিয়ে শুনিয়ে মিছামিছি দু’জন খুব ঝগড়া করতে লাগলো। স্ত্রীকে স্বামীর প্রহার এবং স্ত্রীর কান্নার আওয়াজও শোনা গেল এক পর্যায়ে। গতিক সুবিধের নয় ভেবে অথিতি ভদ্রলোক তার সুটকেস নিয়ে এক ফাঁকে বেরিয়ে গেল।
জানালা দিয়ে স্বামী-স্ত্রী দু’জনই তা দেখে ঝগড়া বন্ধ করে খুব এক চোট হেসে নিল- যে বুদ্ধি করে তারা অথিতি তাড়াতে পেরেছে। স্বামী বললো তোমার লাগে টাগে নিতো? যে জোরে কাদছিলে।স্ত্রী বললো, দূর একটুও লাগেনি। এতো লোক দেখানো কেঁদেছিলাম।
হাঁসিমুখে এক সময় অথিতির আর্বিভাব, হেঁ,হেঁ আমিও কিন্তু লোক দেখানো গিয়েছিলাম।
চার
চাচা-ভাস্তে দু’জন মিলে সন্ধ্যাবেলায় আলাপ-সালাপ করছে-
ভাস্তে : আজকে সকালে বাজারে গেছিলাম।
চাচা : বাজারে যাবি না তো ঘরে বসে থাকবি নাকি?
ভাস্তে : সঙ্গে এক ঝুঁড়ি আম নিয়েছিলাম।
চাচা : আম নিবি না তো কি খালি হাতে বাজারে যাবি?
ভাস্তে : এক কাস্টমার আইসা আমের দাম জিগাইল।
চাচা : দাম জিগাইব না তো মাগনা নিব নাকি?
ভাস্তে : আমি কইলাম ১০০ টাকা কেজি।
চাচা : ঠিকই তো, আম এত সস্তা মনে করছস?
ভাস্তে : কাস্টমার কইল, ৫০ টাকায় দিবা?
চাচা : কাস্টমার তো ঠিক কথাই কইছে। এই আম ৫০ টাকার বেশি হয় নাকি?
ভাস্তে : আমি কইলাম, বাপের জন্মে আম খাইছেন কোনো দিন?
চাচা : উচিত কথা কইছস। ১০০ টাকার আমরে কেমনে ৫০ টাকা কয়?
ভাস্তে : কাস্টমার আমারে গালি দিয়া চইলা গেল।
চাচা : গালি দেবে না তো কি চুমা দেবে? কাস্টমারকে কস বাপের জন্মে আম খাইছেন কোনো দিন!
ভাস্তে : একটু পর বাজারে মোবাইল কোর্ট আইল।
চাচা : আইবো না? বাজারের ভেজাল ফলমূল পরীক্ষা করতে হইব না?
ভাস্তে : ম্যাজিস্ট্রেট আইসা আমার আমগুলা পরীক্ষা করল।
চাচা : পরীক্ষা করব না? তোর আমে যে ভেজাল নাই তার প্রমাণ কপরীক্ষা কইরা আমে ফরমালিন পাইল।
চাচা : আমে ফরমালিন মিশাইলে পরীক্ষা কইরা ফরমালিন পাইব না তো কি সুন্দর বনের মধু পাইব?
ভাস্তে : ম্যাজিস্ট্রেট আমারে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করল।
চাচা : ঠিকই করছে। আমে বজ্জাতি কইরা ফরমালিন মিশাইছ, এইবার জরিমানা দেও।
ভাস্তে : আমগুলাও নষ্ট কইরা ফেলল।
চাচা : নষ্ট করব না? বিষওয়ালা আম খাওয়াইয়া মানুষ মারব নাকি?
ভাস্তে : আমি মনে মনে ওনাগো অনেক গালিগালাজ করলাম।
চাচা : গালিগালাজ করবি না তো আর কী করবি? এতগুলা আম নষ্ট করল!
ভাস্তে : এমন সময় এক পুলিশ আইসা মারতে মারতে আমারে থানায় নিয়া গেল।
চাচা : মারব না তো কি আদর করব? ফলের মধ্যে বিষ মিশাইছ ব্যাটা বদ!
ভাস্তে : থানায় নিয়া কিছুক্ষণ মাইর দেওয়ার পর বড় দারোগা আইল।
চাচা : বড় দারোগা আইব না তো আর কে আইব? খারাপ কাজ করছ এখন ঠেলা সামলাও। দেখো না দারোগা আইসা তোমারে কী করে!
ভাস্তে : দারোগা সাহেব আমার পাছার মধ্যে লাত্থি মাইরা থানা থেইকা বাইর কইরা দিল।
চাচা : উচিত কাম করছে। দারোগা না মারলে আমিই তোর পাছার মধ্যে কইষ্যা লাথি দিতাম। ব্যাটা হারামি। আর কোনো দিন এই আকাম করবি?
ভাস্তে : এই কিরা কাটলাম, বাপের জন্মে আর এই ভুল করুম না।
চাচা : হুম। মনে থাকে যেন।
পাঁচ
বিক্রেতা: এই নাও, তোমাকে ওজনে একটু কম দিলাম, বাসায় নিয়ে যেতে সুবিধা হবে।
পল্টু: এই নিন টাকা।
বিক্রেতা: মাছের দাম তো একশ’ টাকা, দশ টাকা দিলেন কেন?
পল্টু: টাকা একটু কম দিলাম, আপনার গুনতে সুবিধা হবে।
ছয়
গভীর রাতে বাড়িতে চোর ঢুকেছে। এটা-ওটা নিয়ে নিজের ঝোলায় ঢুকাচ্ছে। সবাই ঘুমে, শুধু বাড়ির স্কুলপড়ুয়া পিচ্চিটা সব দেখছে চুপচাপ। চুরি শেষে চলে যাচ্ছে চোর। এমন সময় পিচ্চি কথা বলে উঠলো-
পিচ্চি: ওই মিয়া! আমার স্কুলের ব্যাগটা নেও না কেন? এক্ষনি স্কুল ব্যাগটা তুলে নেও, নইলে সবাইরে জাগাইয়া দিমু কিন্তু!
দ্রব্যগুণ ও টোটকা চিকিৎসা শিখতে ভিজিট করুন
সাত
বসের ভয়ে সর্বদাই তটস্থ থাকে সেই অফিসের এক কেরানি। একদিন সে তার সহকর্মীকে বলল-
কেরানি: ভাই, আজকে আমার শরীরটা খুব খারাপ লাগছে। কী করি বলো তো?
সহকর্মী: স্যার তো এখন অফিসে নাই, তুমি বরং বাড়ি চলে যাও। সহকর্মীর কথায় সাহস করে সে বাড়ি চলে গেল। বাড়ি গিয়ে জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখে বস তার স্ত্রীর সঙ্গে হাঁসাহাঁসি করছে। ভয়ে সে তখনই অফিসে ফিরে গেল। একটু দম নিয়ে সহকর্মীকে বলল-
কেরানি: তোমার কথামতো বাড়ি গিয়ে প্রায় ধরা পড়ে গিয়েছিলাম! কোনোমতে বেঁচে ফিরেছি।
আট
ম্যাডাম: তিতুমীর কে চেনো?
পল্টু: না ম্যাডাম, চিনি না।
ম্যাডাম: চিনবে কি করে, পড়াশোনায় মনোযোগ দাও, তাহলেই চিনতে পারবে।
পল্টু: আপনি কি সুমি আন্টিকে চেনেন?
ম্যাডাম: না, চিনি না।
পল্টু: চিনবেন কিভাবে, স্বামীর ওপর মনোযোগ দেন, তাহলেই চিনতে পারবেন!
নয়
এক চোর চুরি করতে গিয়ে সেলফি তুলে পোস্ট করল, ‘এই মাত্র চুরি করতে ঢুকলাম।’
বাড়ির মালিক পোস্টে লাইক করে কমেন্ট করল, ‘ভেবোনা আমরা ঘুমিয়ে পড়েছি। আমরা জেগে আছি, পুলিশকে খবর দেয়া হয়ে গেছে, তারা গাড়ি নিয়ে আসছে।’
বাড়ির মালিকের কমেন্টে পুলিশ ইন্সপেক্টর কমেন্ট করল, ‘গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা হেঁটে হেঁটে আসছি।’
দশ
লেখাপড়া না জানা ধনী বাবা সেলফোনে ছেলেকে জিজ্ঞেস করছেন-
বাবা: তোর পড়াশোনার খবর কী বাপ!
ছেলে: খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছে না, বাবা। ক্লাস টিচার বলেছেন, পাস করতে আরো এক বছর লেগে যাবে।
বাবা: এক বছর কোনো ব্যাপার না, বাপ। দরকার পড়লে দুই বছর লাগুক- মাগার ফেল করিস না!
এগার
ডিভোর্স মামলায় আদালতে দুই পক্ষের উকিলের তর্ক চলছে। স্বামীর পক্ষের আইনজীবী এক পর্যায়ে আবেগ প্রবণ হয়ে বললেন-
স্বামী পক্ষের আইনজীবী: মি লর্ড! নারীরা বিয়ের আগে, আই মিন প্রেমের সময়ে যে ব্যবহার করে স্বামীদের সঙ্গে তা যদি বিয়ের পরেও করতো- তাহলে কিন্তু ডিভোর্সের হার অর্ধেকে নেমে আসতো!
স্ত্রীর পক্ষের আইনজীবী: ধন্যবাদ, বিজ্ঞ প্রতিপক্ষ। তবে বিয়ের পরে পুরুষরা যে বসসুলভ আচরণ করে তা যদি বিয়ের আগে প্রেমের সময়ে করতো- তবে কিন্তু অর্ধেক বিয়েই হতো না! ডিভোর্স তো পরের কথা…।
বারো
ইংরেজি ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। ইংরেজি স্যার পল্টুকে দেখে বলল-
শিক্ষক: বল্টু, ইউ আর লেট! হোয়াই?
বল্টু: স্যার, আমাদের গাড়ি কাঁদার মধ্যে আটকে পড়েছিল।
শিক্ষক: নো-নো, টেল মি ইন ইংলিশ।
বল্টু: স্যার, আওয়ার গাড়ি ওয়াজ পড়িং ইন কাঁদা। নো নড়িং-চড়িং, অনলি ভুম-ভুম সাউন্ড করিং!
তের
স্বামীর অদ্ভুত এক রোগ হয়েছে। এক চিকিৎসক রোগটি ধরতে পেরেছেন। রোগীর সঙ্গে একান্তে কথা বলার পর তিনি রোগীর স্ত্রীকে ডাকলেন।
চিকিৎসক: আপনার প্রতিদিনকার সমস্যা নিয়ে আপনার স্বামীর সাথে কথা না বলাই ভালো। বাসায় কোনো পারিবারিক ড্রামার হিন্দি টিভি সিরিয়াল চলবে না। সব সময় তাকে আনন্দিত রাখার চেষ্টা করবেন। এজন্য তার সাথে ভালো ব্যবহার করতেই হবে। শাড়ি-গয়নার আবদার আগামী এক বছর পর্যন্ত করবেন না। এভাবে এক বছর চললেই উনি সুস্থ হয়ে যাবেন।
স্ত্রী মুখ গোমরা করে চিকিৎসকের চেম্বার থেকে বের হলেন। বাড়ি ফেরার পথে স্বামী জানতে চাইলেন-
স্বামী: ডাক্তার কী বলেছেন?
স্ত্রী: কিছু না।
স্বামী: ডাক্তার কী বলেছেন, বললে না!
স্ত্রী: বললাম তো কিছু না।
স্বামী: কী হলো? ডাক্তার কী বললেন?
স্ত্রী: কোনো আশা নাই, এই রোগের চিকিৎসা আছে, তবে ওষুধ নাই…।
কৌতুকের আসর পর্বে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
কৌতুকের আসর পর্বে বর্ণিত সকল কৌতুক ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত ও পরিমার্জিত।